৩৮৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ মামলায় আদালতের রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩৮৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের দায়ে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক (জব্দ) করার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার ৫ নম্বর অর্থঋণ আদালত। সোমবার (৪ আগস্ট) বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই গুরুত্বপূর্ণ আদেশ দেন।
ঋণ নিয়েও ফেরত দেয়নি এক্সিম
মামলার সূত্র অনুযায়ী, এক বছর আগে তারল্য সংকট মোকাবিলায় ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৪ টাকার ঋণ নেয় এক্সিম ব্যাংক। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষে ঋণের টাকা ফেরত দেয়নি তারা। ঋণটি খেলাপিতে পরিণত হলে ব্যাংক এশিয়া ঢাকার অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে।
কী বলেছে বাদীপক্ষ
শুনানিতে বাদীপক্ষ আদালতকে জানায়, এ ঋণের বিপরীতে এক্সিম ব্যাংকের কোনো দায়বদ্ধ সম্পত্তি নেই। তবে যেই ভবনে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, যা এখনো দায়মুক্ত।
আদালতের কাছে তারা আরও তুলে ধরেন, এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা এতটাই ভঙ্গুর যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই এটিকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধান কার্যালয়টি জব্দ না করা হলে ব্যাংক এশিয়ার বিশাল অঙ্কের ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
আদালতের সিদ্ধান্ত
আদালত সব পক্ষের বক্তব্য ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কেন ক্রোক করা হবে না—তা জানতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেন। একইসঙ্গে, ওই সময়ের মধ্যে কোনো আপত্তি বা জবাব না দিলে অস্থায়ীভাবে প্রধান কার্যালয়টি জব্দ থাকবে বলে আদেশ দেন বিচারক।
পরবর্তী শুনানি
মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। এ সময় এক্সিম ব্যাংককে তাদের লিখিত জবাব দাখিল করতে হবে।
একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় জব্দের আদেশ দেশের ব্যাংকিং খাতে অত্যন্ত বিরল ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ব্যাংক খাতে দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা ও খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
মো: জাহিদ/